Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
মালেকা বানু মসজিদ
কিভাবে যাওয়া যায়

বাঁশখালী উপজেলার জলদী মিয়ার বাজার হতে  ৩ কি:মি পশ্চিমে সরল ইউনিয়নের মালেকা বানু মসজিদে সড়কপথে যাওয়া যায়।

বিস্তারিত

মালেকা বানু মসজিদ :  ঐতিহাসিক  মালেকা বানু চৌধুরীর জন্মস্থান চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নে। কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়েনে অবস্থিত মালেকা বানুর মসজিদটি।  এখানে বিশাল একটা দীঘি ছিল এককালে। কিন্তু কালের আবর্তে দীঘিটা আজ আর নেই। এক চোখের পথ ছিল এই মালেকাবানুর দীঘি। দীঘির পশ্চিম পাশে ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে মালকাবানুর মসজিদটিই এখন স্মৃৃতির স্বাক্ষর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মসজিদের দেওয়ালে পূর্ব পাশে খোদাইকৃত একটি পলকে মালকাবানু চৌধুরী মসজিদের সংক্ষিপ্ত লিপিবদ্ধ ছিল। মোগল শাসনামলের শেষ দিকে জমিদার আমির মোহাম্মদ চৌধুরী এই মসজিদটি নির্মাণ করেন।  তিনি ছিলেন ঐতিহ্যবাহী মালেকা বানু চৌধুরীর পিতা।  ইতিহাস থেকে জানা যায়, মালেকা বানুর পিতা আমির মোহাম্মদ চৌধুরী  ছিলেন তৎকালের প্রভাবশালী জমিদার। তার আট সন্তানের মধ্যে একমাত্র কন্যা মালেকা বানু চৌধুরী। তার বাবার জিবদ্দশায় মালেকা বানু বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন চট্টগ্রামের আনোয়ারার আরেক জমিদার পুত্র মনু মিয়ার সঙ্গে।  মনুমিয়া জমিদার বংশের পুত্র হলেও মালেকা বানু ছিলেন বাঁশখালী থানার সরলা গ্রামের বিখ্যাত এক সওদাগর আমির মোহাম্মদের কন্যা। মালেকা বানুর পিতা আমির মোহাম্মদ চৌধুরীর আট সন্তানের মধ্যে একমাত্র কন্যা মালেকা বানু চৌধুরী। মনুমিয়া একদিন পাইক পেয়াদা সঙ্গে নিয়ে জমিদারি তদারকিতে বাঁশখালীর সরলা গ্রামের সওদাগর বাড়িতে পৌঁছে সাময়িক বিশ্রাম নেন। এ সময় মনুমিয়া  অপূর্ব সুন্দরী সওদাগর কন্যা মালেকা বানুকে  কাজীর মক্তবে অধ্যয়নরত অবস্থায় দেখতে পান।  তখন থেকেই মালেকা বানুর প্রেমে পড়েন মনুমিয়া। এরপর প্রেমের টানে মনু বারবার ছুটে যেতেন মালকা বানুর বাড়িতে। অবশেষে কাজীর মাধ্যমে মালেকার বাবার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন মনু। মালেকার বাবা সওদাগর রাজি হলেও বিয়েতে মালেকা রাজি ছিলেন না। কারণ হিসেবে মালেকা মনুকে বলেছিলেন- সাম্পানযোগে নদী পার হতে তার ভয় করে। কারণ শঙ্খ নদীর এপারে মনুমিয়ার বাড়ি ওপারে মালেকার। কাজেই বধূ সেজে মনুমিয়ার বাড়ি যেতে হলে উত্তাল শঙ্খনদী পাড়ি দিতে হবে। মালেকার মুখে এ কথা শুনে মনুমিয়া স্থির করলেন শঙ্খের বুকে বাঁধ নির্মাণ করবেন। যেমন চিন্তা তেমন কাজ। মনু মিয়া শঙ্খ নদীর বুকে নির্মাণ করলেন বিশাল এক বাঁধ। তারপর বধূ সাজিয়ে সড়কপথে মনুর রাজপ্রাসাদে এনে তুললেন  মালেকাকে। জনশ্রুতি আছে মালেকা বানু ও মনুমিয়ার বিয়ে হয়েছিল খুব জাঁকজমকপূর্ণভাবে। একমাস ধরে চলেছিল তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান। তাদের সংসারে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হলে মালেকা বানু স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে পিতৃবাড়ি বাঁশখালীর সরলে চলে আসেন।

সাত পুত্রসন্তান ও এক কন্যার জনক আমির মোহাম্মদের আদরের একমাত্র দুলারী মালেকা বানুর বিয়ের পর নিঃসঙ্গ পিতা, কন্যার স্মরণে বাঁশখালীর সরলে নির্মাণ করেন একটি মসজিদ ও দীঘি। যা ইতিহাসে মালেকা বানুর মসজিদ ও দীঘি নামে পরিচিত। মসজিদে ফরাসি ভাষায় একটি শিলালিপি ছিল এমন তথ্য থাকলেও বর্তমানে তা আর নেই। জনশ্রুতিতে জানা যায়, পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন দুর্যোগে বিলীন হযয়ে যায় ফরাসি ভাষায় লিপিবদ্ধ শিলালিপিটি। শত শত বছরের প্রাচীন ইতিহাসের স্মৃতিবহ মসজিদটির প্রকৃত তথ্য জানা এখনও সম্ভব হয়নি।